Header Ads

আমাদের সাইটে আপনার বিজ্ঞাপন দিন?

WiFi হ্যাকিং কি আদৌ সম্ভব?

আমরা অনেকেই হ্যাকিং এর প্রতি অগ্রহি। শুনলেই কেমন যেন একটু টেকি টেকি ভাব চলে আসে মনে। অনলাইনেও হ্যাকিং নিয়ে নানা রকমের ভিডিও এবং আর্টিকেল প্রকাশ করা হয়। গুগলে “How to Hack WiFi Password” কিওয়ার্ডটা অনেক বেশি সার্চ হয়। এর কারন হচ্ছে প্রতিনিয়ত মানুষ এই বিষয়ে গুগলে সার্চ করছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে আসলেই কি ওয়াইফাই পাসওয়ার্ড হ্যাক করা যায়?
হ্যাকিং মানে হচ্ছে কোন সিকিউরিটি সিস্টেম ভেঙ্গে সেখানে থাকা গোপন তথ্য বের করে নেওয়া। ওয়াইফাই-এর পাসওয়ার্ডও কিছু সিকিউরিটি সিস্টেম দিয়ে নিরাপদ করে রাখা হয়। এই সিকিউরিটি সিস্টেম কতোটা শক্ত তার উপরে নির্ভর করে ওয়াইফাই পাসওয়ার্ড হ্যাক হবে কি হবে না। ওয়াইফাই এর নতুন সিকিউরিটি WAP2 একটু বেশি নিরাপদ যেটা হ্যাক করা খুবই কঠিন কাজ। WAP2 এর পাসওয়ার্ড Encrypted হয়ে থাকার কারনে পাসওয়ার্ড পেয়ে গেলেও সেটা বের করে আনা যায় না।
তবে কিছু দুর্বলতা আছে যেগুলোর সুযোগ নিয়ে ওয়াইফাই হ্যাক করা যায়। তেমন একটা হচ্ছে WPS, এই ফিচারটি চালু থাকলে রাউটারে মেইন পাসওয়ার্ড এর পাশাপাশি একটি বিকল্প পাসওয়ার্ড সেট হয়। যেটি মেহমান কিংবা এমন কেউ যাকে মেইন পাসওয়ার্ড বলা যাবে না তাকে দেওয়া হয়। রাউটারের পাশেই WPS নামের একটা বাটন আছে যেটি চেপে দিলেই এই ফিচারটি চালু হয়। ৮ ডিজিটের WPS পিন নাম্বারটি রাউটারের নিচে লিখা থাকে।
WPS চালু থাকে Brute Force অ্যাটাকের মাধ্যমে ৮ ডিজিটের এই পিনটি পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
Brute Force অ্যাটাক হচ্ছে এমন একটি পদ্ধতি যেটার সাহায্যে নির্দিষ্ট পরিমাণ নাম্বারের সকল কম্বিনেশন এক বার করে পাসওয়ার্ড হিসেবে প্রবেশ করানো হয়। পাসওয়ার্ড যদি ২ সংখ্যার হয় তাহলে Brute Force অ্যাটাকের মাধ্যমে ২ টি সংখ্যাকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ২ বার প্রবেশ করাবে। এই প্রসেসটি অটোম্যাটিক। কিন্তু নাম্বার সংখ্যা যখন বেশি হয়ে যায় তখন সেগুলো দিয়ে অনেক বেশি কম্বিনেশন হয় তখন এক এক করে সবগুলো চেষ্টা করতে অনেক সময় লাগে। প্রসেসরের স্পীডের উপরে নির্ভর করে কত তাড়াতাড়ি পাসওয়ার্ড গুলো প্রবেশ করানো হবে।
০-৯ পর্যন্ত ৮ ডিজিটের WPS পাসওয়ার্ড টি ১০ কোটি রকমের হতে পারবে। Brute Force অ্যাটাক দিলে সেটি ১০ তম পাসওয়ার্ড প্রবেশ করানোর পরেই পাসওয়ার্ড বের হয়ে আসতে পারে অথবা ১০ কোটিতম বারেও আসতে পারে। তাই এখানে পাসওয়ার্ড পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। আমাদের বর্তমানে যে প্রসেসর স্পীড আছে সেটি ব্যাবহার করে ১০ কোটি পাসওয়ার্ড প্রবেশ করাতে ২ দিনের বেশি সময় লাগবে।
এছাড়াও রাউটারের অ্যাডমিন প্যানেলের ডিফল্ট ইউজারনেম পাসওয়ার্ড না বদলালে সেটা দিয়ে লগিন করে পাসওয়ার্ড হ্যাক (এক্ষেত্রে চুরি) করা যায়।
এছাড়া শক্ত সিকিউরিটি যুক্ত পাসওয়ার্ড কালি লিনাক্সের মাধ্যমে হ্যাক করা যায় তবে সেক্ষেত্রে আপনার লিনাক্সের টার্মিনাল এবং হ্যাকিং-এর উপর বেশ ভালো দখল থাকতে হবে।
অ্যান্ড্রয়েড দিয়ে ওয়াইফাই হ্যাকঃ
অনেকেই প্লে স্টোর থেকে অ্যান্ড্রয়েড দিয়ে ওয়াইফাই পাসওয়ার্ড হ্যাক করার চেষ্টা করেন। বেশিরভাগ অ্যাপগুলোই ভুয়া হয়, এগুলো দিয়ে পাসওয়ার্ড হ্যাক হয় না বরং আপনার নিজের ফোন হ্যাক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে অ্যান্ড্রয়েডে কিছু অ্যাপ আছে যেগুলো Brute Force অ্যাটাক দিতে সক্ষম, আর Brute Force দিয়ে পাসওয়ার্ড পাওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু সেটাতো আগেই আলোচনা করলাম। আর, কিছু অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ আছে যারা লোকেশনের ভিত্তিতে পাসওয়ার্ড বের করে দেয়, সেগুলোকে হ্যাকিং বলা যাবে না।
আপনার ওয়াইফাই হ্যাক হওয়া থেকে কিভাবে বাঁচবেন?
  • নতুন সিকিউরিটি WPA2 ব্যাবহার করুন
  • পাসওয়ার্ড যত সম্ভব কঠিন দিন
  • প্রয়োজন ছাড়া WPS অন করে রাখবেন না
  • রাইটারের ডিফল্ট অ্যাডমিন ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ড বদলে ফেলুন।
এই বিষয়গুলো মেনে চললেই আপনার পাসওয়ার্ড হ্যাক হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.